১। কর নির্ধারণ বিভাগের প্রধান কাজগুলি কী?
কর নির্ধারণ বিভাগের প্রধান কাজগুলি হল:
ক) যে সম্পত্তির জন্য সম্পত্তি কর নির্ধারিত হবে সেটিকে চিহ্নিত করা,
খ) এই ধরনের সম্পত্তিগুলিকে নথিভুক্ত করা এবং তার বিশদ বিবরণ রাখা।
গ) সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যমান (অ্যানুয়াল ভ্যালুয়েশন) নির্ধারণের জন্য সেটির মূল্যায়ন করা ও সেটিকে পর্যায়ভুক্ত করা,
ঘ) শুনানির মাধ্যমে সম্পত্তির মূল্যায়নের বিষয়টির নিষ্পত্তি করা,
ঙ) শুনানির পর সম্পত্তির পরিবর্তিত মূল্যমান নির্ধারণের পর নতুন বা অনুপূরক (ফ্রেশ/সাপ্লিমেন্টারি) বিল প্রস্তুত করা ও সেটির টাকা জমা নেওয়া।
চ) বকেয়া সম্পত্তি করের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সেটি আদায় করা,
ছ) সম্পত্তির মূল তালিকার (অ্যাসেসি মাস্টার) পাশাপাশি একটি মোট চাহিদা তালিকা (ডিমান্ড মাস্টার) প্রতিবছর তৈরি করে প্রাথমিক চাহিদার (প্রিলিমিনারি ডিমান্ড) বিল প্রতিবছর প্রতি ঠিকানায় পাঠানো,
জ) মালিকানা বদলের ক্ষেত্রে নামান্তরকরণের (মিউটেশন) পদ্ধতি প্রয়োগ।
২। কখন আমি এই বিভাগে যোগাযোগ করব?
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে নাগরিকরা লিখিত প্রতিবেদন বা দরখাস্তের মাধ্যমে কর নির্ধারণ (অ্যাসেসমেন্ট) বিভাগে যোগাযোগ করুন-
ক) নতুন সম্পত্তি ক্রয়-এক্ষেত্রে দলিল পাবার ৯০ দিনের মধ্যে যোগাযোগ করতে হবে,
খ) নামান্তরকরণ (মিউটেশন)-উত্তরাধিকারসূত্রে অথবা অন্যান্যভাবে,
গ) পৃথকীকরণ (সেপারেশন), একত্রীকরণ (অ্যামালগ্যামেশন), বিভাজন (অ্যাপোরশনমেন্ট),
ঘ) সম্পত্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবর্তন হলে (যেমন, বসবাসের পরিবর্তে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার...ইত্যাদি)।
৩। সম্পত্তির নামান্তরকরণ বিষয়টি ঠিক কী?
সম্পত্তির প্রকৃত মালিকের নাম নথিভুক্ত করাই হল নামান্তরকরণ বা মিউটেশন।
উপরে
৪। নামান্তরকরণের জন্য কতদিন সময় লাগে?
সাধারণ নামান্তরকরণের জন্য ২ থেকে ৭ দিন সময় লাগে এবং পৃথকীকরণ (সেপারেশন), একত্রীকরণ (অ্যামালগ্যামেশন), বিভাজন (অ্যাপোরশনমেন্ট) এই সমস্ত ক্ষেত্রে প্রায় ১৫ দিন সময় লাগে।
৫। সম্পত্তি ক্রয়, নামান্তরকরণ, পৃথকীকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমি কর নির্ধারণ বিভাগে কী কী প্রমাণপত্র (ডকিউমেন্ট) জমা দেব?
সম্পত্তি ক্রয়, নামান্তরকরণ, পৃথকীকরণ, একত্রীকরণ বা বিভাজন করতে হলে প্রথমে পৌরসংস্থার প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত রেকর্ডস বিভাগ থেকে এ-৪২ ফর্ম ক্রয় করুন। তারপর সেটিকে যথাযথভাবে পূরণ করে ওই ফর্মে উল্লিখিত সমস্ত প্রমাণপত্র সংযুক্ত করুন। তারপর ডাক বিভাগের মাধ্যমে বা সরাসরি নিজে গিয়ে সেটি জমা দিতে পারেন। তবে সরাসরি নিজে জমা দেওয়াটাই বাঞ্ছনীয়।
৬। এ-৪২ ফর্মের সঙ্গে আমাকে কি কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণপত্র দিতে হবে?
সম্পত্তি ক্রয়, নামান্তরকরণ, পৃথকীকরণ, একত্রীকরণ বা বিভাজন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অতিরিক্ত প্রমাণপত্র প্রয়োজন হয়, তবে নামান্তরকরণের জন্য বকেয়াহীনতা-শংসাপত্র (এন ও সি) আবশ্যিক। অন্যান্য ক্ষেত্রে বকেয়াহীনতা শংসাপত্র বাধ্যতামূলক না হলেও থাকাটা বাঞ্ছনীয়।
৭। বকেয়াহীনতা-শংসাপত্র (এন ও সি) কী? আমি কীভাবে বকেয়াহীনতা শংসাপত্র (এন ও সি) পাবো?
বকেয়াহীনতা-শংসাপত্র (এন ও সি) পাওয়ার প্রথম ধাপ হল, কর নির্ধারণ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কমপিউটার কেন্দ্র থেকে বকেয়ার সম্পূর্ণ বিবরণ সম্বলিত একটি জ্ঞাপন-পত্র (লেটার অফ ইনটিমেশন) সংগ্রহ করা। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট কর নির্ধারক (অ্যাসেসর-কালেক্টর)-এর কাছ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এই জ্ঞাপন-পত্রটি যাচাই বা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া। তৃতীয়ত, কোনো বকেয়া থাকলে তা নগদে (পঁচিশ হাজার টাকা পর্যন্ত) বা KOLKATA MUNICIPAL CORPORATION-এর নামে ডিমান্ড ড্রাফ্ট করে মিটিয়ে দেওয়া। বকেয়া মেটানোর পর অনতিবিলম্বেই সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির মালিক বকেয়াহীনতা-শংসাপত্র পেয়ে যাবেন।
৮। প্রমাণপত্র সংগ্রহের খরচ কত?
ক) এ-৪২ ফর্ম বিনামূল্যেই সংগ্রহ করা যায়,
খ) নামান্তরকরণ/বিভাজন/পৃথকীকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রসেসিং ফি ১০০ টাকা।
গ) অ্যামালগ্যামেশান ফি।
(A) |
For below 500 Sq. Mtr. |
300.00 |
(B) |
For 500 Sq.Mtr. & above but less than 1000 Sq. Mtr. |
2000.00 |
(C) |
For 1000 Sq. Mtr.& above but less than 1500 Sq. Mtr. |
10000.00 |
(D) |
For 1500 Sq. Mtr. & above |
20000.00 |
উপরে
৯। প্রমাণপত্র পেশ করার পর কী ঘটে?
সমস্ত প্রমাণপত্র সমেত বিষয়টি কলকাতা পৌরসংস্থাতে পেশ করার পর প্রথমেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে একটি রসিদ দেওয়া হয়। পরবর্তী পদক্ষেপগুলি হল:
ক) ফাইল সম্পূর্ণ তৈরি হওয়ার পর ১০ দিনের মধ্যে অ্যাসেসি নম্বর পাঠানোর পর পুরসভার একজন নির্দিষ্ট পরিদর্শক (ইনস্পেক্টর) সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির প্রমাণপত্রে উল্লিখিত ব্যবহারের সত্যতা পরীক্ষা করতে যান। অর্থাৎ, বাসভবন উল্লিখিত হলে প্রকৃতই সেটি বাসভবন কী না অথবা, বাণিজ্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথার্থই তাই কী না,
খ) এই তথ্য ও অনুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করেই সম্পত্তির মূল্যায়ন করা হয়,
গ) এই মূল্যায়নের খুটিনাটি বিবরণ কর নির্ধারণ বিভাগের প্রতিটি ওয়ার্ডের পরিদর্শন-নথি (ইনস্পেকশন বুক)-তে লিপিবদ্ধ করা হয়,
ঘ) এই মূল্যায়নের ওপর নির্ভর করে উপ কর নির্ধারক (ডেপুটি অ্যাসেসর-কালেকটর), কর নির্ধারক অ্যাসেসর-কালেকটর), উপ পৌর মহাধ্যক্ষ (ডেপুটি মিউনিসপ্যাল কমিশনার) এদের অনুমোদন। এই অনুমোদন পাওয়া যায় ১৫ দিনের মধ্যে,
ঙ) কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম অ্যাসেসমেন্ট রেজিস্টারে নথিবদ্ধ করা হয় এবং একটি অ্যাসেসি নম্বর তৈরি করা হয়, তারপর কর নির্ধারক (অ্যাসেসর-কালেকটর) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মূল্যমান ও অ্যাসেসি নম্বর জানিয়ে এ-১০৫ ফর্মে একটি পত্র পাঠান।
১০। সম্পত্তির মূল্যমানের সঙ্গে একমত না হলে আপত্তি জানাতে কী করব?
ক) ফর্ম নং এ-১০৫ এ স্থিরীকৃত মূল্যমানের সঙ্গে একমত হলে সংশ্লিষ্ট মালিক স্বাক্ষর করে দিন,
খ) অন্যথায় কর নির্ধারকের কাছে একটি শুনানির দিন স্থির করার জন্য লিখিত আবেদন জানাতে পারেন,
গ) যদি সংশ্লিষ্ট মালিক এ-১০৫ ফর্মে নির্ধারিত মূল্যমান সম্পর্কে ৪৫ দিন পর্যন্ত নিরুত্তর থাকেন তাহলে এই মালিকের কাছে শুনানি বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। শুনানি বিজ্ঞপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যায়ন, শুনানি আধিকারিকের নাম ও ঠিকানা থাকে। এছাড়াও শুনানির স্থান ও তারিখের উল্লেখ থাকে ওই বিজ্ঞপ্তিতে,
ঘ) ৫ কাঠা পর্যন্ত শূন্য বা ফাঁকা জমির ক্ষেত্রে তার বার্ষিক মূল্যমান হল ৩ আগস্ট, ২০০৮ থেকে সমগ্র জমির মোট বাজার দরের ২.৫ শতাংশ। জমির পরিমাণ ৫ কাঠার বেশি হলে তার বার্ষিক মূল্যমান হবে জমির মোট বাজার দরের ৭ শতাংশ। ২০০৮-২০০৯ সনের মার্চ মাসের আগে সাধারণ কর নির্ধারণের সময় পরিমাণ নির্বিশেষে সমস্ত শূন্য বা ফাঁকা জমির বার্ষিক মূল্যমান হবে সেই জমির মোট বাজার দরের ৭ শতাংশ।
তবে বর্তমানে কলকাতা পৌরসংস্থা এলাকা ভিত্তিক সম্পত্তি কর নির্ধারণের পদ্ধতি (ইউনিট এরিয়া আ্যাসেসমেন্ট) প্রবর্তন করায় প্রয়াসী।
উপরে
১১। শুনানি দপ্তরে (হিয়ারিং অফিসে) কী হয়?
ক) শুনানি বিজ্ঞপ্তিতে শুনানির তারিখ, সময় ও শুনানি আধিকারিকের নম্বর উল্লেখ করা হয়। কলকাতা পৌরসংস্থার ওয়েবসাইটে যে কোনো ব্যক্তি তার শুনানি সংক্রান্ত বিষয় জেনে নিতে পারেন,
খ) শুনানি আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনার পর কোনও ব্যক্তি তার সম্পত্তির মূল্যমানে সম্মত হলে, সম্পত্তি করের বিল তৎক্ষণাৎ সেই ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়,
গ) এ-৪২ ফর্ম অনুসারে সম্পত্তির নির্ধারিত মূল্যমানে শুনানি আধিকারিক সন্তুষ্ট না হলে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র ও অন্যান্য তথ্যাদির সাপেক্ষে নতুন মূল্যমান নির্ধারণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে নতুন মূল্যমান অনুযায়ী নতুন/অনুপূরক (ফ্রেশ/সাপ্লিমেন্টারি) সম্পত্তি করের বিল সেই দিনই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হবে,
ঘ) যদি সম্পত্তির মালিক শুনানি আধিকারিক নির্ধারিত বার্ষিক মূল্যমানের সঙ্গে একমত না হন, তবে তিনি ১৯৮০ সনের পৌর আইনের ১৮৮ নং ধারা অনুযায়ী পৌর কর নির্ধারণ ন্যায়পীঠে (মিউনিসিপ্যাল অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইব্যুনাল) পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে তার আগে শুনানি আধিকারিক নির্ধারিত মূল্যমান অনুসারে সম্পত্তি করের যাবতীয় বকেয়া জমা দিতে হবে।
১২। সম্পত্তি মূল্যায়নের পদ্ধতিটি ঠিক কী রকম?
কলকাতা পৌরসংস্থা বার্ষিক মূল্যমান নির্ধারণের ক্ষেত্রে বার্ষিক হারে মূল্যমান পদ্ধতি (অ্যানুয়াল রেটেড ভ্যালুয়েশন মেথড) অনুসরণ করে থাকে। যদি মালিক নিজেই সেই সম্পত্তি ভোগ ব্যবহার করেন তবে বিভাগীয় তথ্যাদি সাপেক্ষে যুক্তিসঙ্গত ভাড়া নির্ধারণ পদ্ধতি (রিজনেবল রেন্ট মেথড) প্রয়োগ করে বার্ষিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ একই অঞ্চলে অন্যত্র অনুরূপ সম্পত্তি ভোগের জন্য কত টাকা ভাড়া স্থির করা হয়েছে বা চালু রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে এই যুক্তসঙ্গত ভাড়া নির্ধারণ পদ্ধতি আরোপিত হয়। মাসিক এই ভাড়াকে বারো দিয়ে গুণ করে বার্ষিক ভাড়া নির্ধারিত হয়। তার দশ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয় সেই সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় বাবদ এবং নব্বই শতাংশ স্থির হয় সেই সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যমান।
যদি ওই সম্পত্তিতে ভাড়া দেওয়া থাকে তবে সেই মাসিক ভাড়াকে (সার্ভিস চার্জ সমেত) বারো দিয়ে গুণ করে যথারীতি তার দশ শতাংশ বাদ দিয়ে স্থির হয় সেই সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যমান। থিয়েটার বা সিনেমা হলের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত আদায়ের থেকে কর বাদ দিয়ে মোট বার্ষিক আদায়ের ৭.৫ শতাংশ স্থির হয় সেই থিয়েটার বা সিনেমা হলের বার্ষিক মূল্যমান।
উপরে
১৩। সম্পত্তির বার্ষিক কর কী?
কোনও সম্পত্তির বার্ষিক কর বা বার্ষিক মূল্যমান এক নয়। বার্ষিক মূল্যমান অনুসারে বার্ষিক কর নির্ধারণের পদ্ধতিটি নীচের সারণিতে দেখানো হল।
ক্রম |
বার্ষিক মূল্যমান(AV) |
বার্ষিক কর |
ছাড় (যদি সময়ে কর দেওয়া হয়) |
১ |
৬০০ টাকার কম |
বার্ষিক মূল্যমান x ০.১১ |
ত্রৈমাসিক কর x০.০৫ |
২ |
৬০০ টাকার বেশি কিন্তু ১৮০০০ টাকার কম |
(বার্ষিক মূল্যমান/৬০০+১০) x ১/১০০ x বার্ষিক মূল্যমান |
ত্রৈমাসিক কর x ০.০৫ |
৩ |
১৮০০০ টাকার বেশি |
বার্ষিক মূল্যমান x ০.৪০ |
ত্রৈমাসিক কর x০.০৫ |
|
ত্রৈমাসিক কর = বার্ষিক কর / ৪ পুনঃ- অনাবাসিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বাণিজ্যিক সারচার্জ (করের ৫০ শতাংশের বেশি নয়) প্রযোজ্য।
ক) যদি বার্ষিক মূল্যমান ৩০০ টাকার বেশি কিন্তু ৬০০ টাকার কম হয়, তখন বার্ষিক কর হবে বার্ষিক মূল্যমানের ১১%। ধরা যাক, বার্ষিক মূল্যমান ৫০০ টাকা। সেক্ষেত্রে বার্ষিক কর-৫০০ টাকার ১১% অর্থাৎ ৫৫ টাকা এবং ৫০০ টাকার ০.৫% (হাওড়া ব্রিজ কর) এর যোগফল। এই বার্ষিক করের এক চতুর্থাংশের নিকটস্থ সংখ্যার টাকায় নির্ধারিত হয় ত্রৈমাসিক কর। নির্দিষ্ট দিনের মধ্য জমা দিলে ত্রৈমাসিক করের ওপর ৫% ছাড় দেওয়া হয়।
খ) যদি বার্ষিক মূল্যমান ৬০০ টাকার বেশি কিন্তু ১৮০০০ টাকার কম হয়, তখন বার্ষিক মূল্যমানকে ৬০০ দিয়ে ভাগ করে ভাগফলের সঙ্গে ১০ যোগ করার পর যে সংখ্যাটি পাওয়া যায় তার নিকটস্থ সংখ্যার সমপরিমাণ শতাংশ (বার্ষিক মূল্যমানের ওপর) এবং ০.৫% (হাওড়া ব্রিজ কর) এর যোগফল হল বার্ষিক কর। ধরা যাক, বার্ষিক মূল্যমান ১৩০০ টাকা। সেক্ষেত্রে বার্ষিক কর -১৩০০ টাকার (১৩০০/৬০০+১০ = ২.১৬+১০ = ১২.১৬ নিকটস্থ সংখ্যায় ১২.২) শতাংশ। অর্থাৎ ১৫৮.৬০ টাকা। এর সঙ্গে যোগ হবে ১৩০০ টাকার ০.৫% হাওড়া ব্রিজ কর। এই বার্ষিক করের এক চতুর্থাংশের নিকটস্থ সংখ্যার টাকায় নির্ধারিত হয় ত্রৈমাসিক কর। নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে জমা দিলে ত্রৈমাসিক করের ওপর ৫% ছাড় দেওয়া হয়।
গ) যদি বার্ষিক মূল্যমান ১৮০০০ টাকার বেশি হয়, তখন বার্ষিক কর হবে, ১৮০০০ টাকার ৪০ শতাংশ। ধরা যাক, বার্ষিক মূল্যমান ২০০০০ টাকা। সেক্ষেত্রে বার্ষিক কর-২০০০০ টাকার ৪০% ও ২০০০০ টাকার ০.৫% হাওড়া ব্রিজ করের যোগফলের নিকটস্থ সংখ্যার টাকায় নির্ধারিত হয় বার্ষিক কর। বার্ষিক করের এক চতুর্থাংশের নিকটস্থ সংখ্যার টাকায় নির্ধারিত হয় ত্রৈমাসিক কর। নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে জমা দিলে ত্রৈমাসিক করের ওপর ৫% ছাড় দেওয়া হয়।
ঘ) ফ্ল্যাট বা নির্দিষ্ট ইউনিটের ক্ষেত্রে ওই ঠিকানার সমস্ত ফ্ল্যাট বা ইউনিটগুলির পুঞ্জীভূত বার্ষিক মূল্যমানের ওপর নির্ধারিত হয় সামগ্রিক বার্ষিক কর। এই বার্ষিক কর প্রত্যেকটি ফ্ল্যাট বা ইউনিটের বার্ষিক মূল্যমানের সাপেক্ষে আনুপাতিক হারে বন্টিত ও প্রযোজ্য হয়।
ঙ) বস্তি বা অন্যান্য বিধিসম্মত সংগঠনগুলির ক্ষেত্রে করের হার ভিন্ন। বস্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বার্ষিক করের পরিমাণ হল যথাক্রমে বার্ষিক মূল্যমানের ১৮% ও ১৫%।
চ) আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বাণিজ্যিক বা অনাবাসিক হিসেবে ব্যবহৃত সম্পত্তির ক্ষেত্রে বার্ষিক করের ওপর অনধিক ৫০% সারচার্জ অতিরিক্ত আরোপিত হয়।
ছ) অনধিক ৩০০ টাকা বার্ষিক মূল্যমান সম্বলিত সম্পত্তির ক্ষেত্রে কোনও কর প্রযোজ্য নয়।
উপরে
১৪। বস্তিতে করের হার কী?
বস্তি, নির্দিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য বিধিসম্মত সংগঠনগুলির ক্ষেত্রে করের হার ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বিদ্যালয়ের সম্পত্তি কর সম্পূর্ণ মকুব করা যায় যদি:
- বাড়ি সেই বিদ্যালয়ের নিজস্ব হয়,
- সেই বিদ্যালয়ের হিসাব, স্বীকৃত পরীক্ষক দ্বারা পরীক্ষিত হয়,
- সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বেতনভুক হয়,
ওয়েস্ট বেঙ্গল স্লাম এরিয়া (ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড ক্লিয়ারেন্স) অ্যাক্ট, ১৯৭২ এর অধীনে উন্নীত বস্তি এলাকার কোনো জমি, কুঁড়েঘর বা বাড়ীর ক্ষেত্রে বার্ষিক মূল্যায়নের ১৮% এবং অন্যান্য বস্তির ক্ষেত্রে তা ১৫% হারে কর ধার্য হবে।
১৫। সম্পত্তি মূল্যায়ন প্রতিবেদন (প্রপার্টি ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট) পেতে কত সময় লাগে?
সম্পত্তির মালিকের নামান্তরকরণের পর সাতটি কাজ়ের দিনের মধ্যেই সম্পত্তি মূল্যায়ন প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
১৬। সমস্ত প্রমাণপত্র ও তথ্যাদি পেশ করার পরেও যদি সম্পত্তি মূল্যায়ন প্রতিবেদন পেতে অতিরিক্ত বিলম্ব হয় তাহলে করণীয় কী ?
এই ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা সচরাচর ঘটে না। তবুও যদি ঘটে, অ্যানেক্সর-‘এ’ তে প্রদত্ত দূরভাষের মাধ্যমে আপনি তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট কর নির্ধারক (অ্যাসেসর কালেকটর)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনি ই-মেল ও করতে পারেন এই ঠিকানায় cm_mkt@kmcgov.in এবং আমরা যত শীঘ্র সম্ভব আপনার অভিযোগের সমাধান করার চেষ্টা করবো।
১৭। বার্ষিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন (অ্যানুয়াল ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট) এবং /অথবা সম্পত্তি কর নির্ধারণে যদি আমি সন্তুষ্ট না হই, তাহলে আপত্তি জানাতে আমি শুনানিতে কিভাবে বিষয়টি হাজির করব? শুনানির পর কত সময় লাগবে?
কলকাতা পৌরসংস্থা নির্ধারিত সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যমান ও সম্পত্তি করের সঙ্গে কোনও ব্যক্তি একমত না হতেই পারেন। সেক্ষেত্রে পৌর আইন, ১৯৮০-র ১৮৬ ও ১৮৭ ধারা অনুসারে শুনানি আধিকারিকের কাছে আপত্তি জানাবার তাঁর যথেষ্ট সুযোগ বা স্বাধীনতা আছে। শুনানি আধিকারিক এই ধরনের আপত্তি (মৌখিক/লিখিত) বিবেচনা করে পৌর আইন, ১৯৮০-র ১৮৮ ধারা অনুযায়ী সেই সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যমান নির্ধারণ করেন। তাঁর সিদ্ধান্তের পরেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আবেদন জানাতে পারেন পুনর্বিচারের জন্য। সেক্ষেত্রে পৌর আইন, ১৯৮০-র ১৮৯ ধারা অনুসারে তাঁকে পৌর কর নির্ধারণ ন্যায়পীঠে (মিউনিসিপ্যাল অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইবুন্যাল) আবেদন জানাতে হবে। এই ন্যায়পীঠ একজন চেয়ারম্যান ও অনধিক পাঁচজন সদস্য দ্বারা গঠিত। উল্লেখনীয় যে, বকেয়া সমস্ত কর জমা দেবার পর তবেই পৌর কর নির্ধারণ ন্যায়পীঠে এই আবেদন বিচারের যোগ্য হয়ে উঠবে। কারণ ন্যায়পীঠে এই ধরনের আবেদনের ক্ষেত্রে ১৯৮৩-র সীমাবদ্ধতা আইন, (প্রভিশনস অফ লিমিটেশন অ্যাক্ট) প্রযোজ্য। ন্যায়পীঠে নির্ধারিত বার্ষিক মূল্যমানই চরম ও চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে এবং পরবর্তীকালে কোনও সদর আদালতে এই মূল্যমান পুনর্বিবেচনার কোনও সুযোগ থাকবে না।
উপরে
১৮। প্রয়োজনে সম্পত্তি মূল্যমান নির্ধারণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে কী করব?
অনুগ্রহ করে নিম্নের সারণিতে প্রদত্ত সংশ্লিষ্ট কর নির্ধারকের সাথে যোগাযোগ করুন।
১৯ ।শুনানির বিষয়টি কোথায় কোথায় পরিচালিত হয়?
নিম্নের সারণি-তে প্রদত্ত ঠিকানায় শুনানি পরিচালিত হয়। অনুগ্রহ করে স্থানীয় ওয়ার্ড অফিসে যোগাযাগ করুন।
২০। শুনানির সময় ব্যক্তিগত আইনজ্ঞ নিয়োগ করা কী প্রয়োজন?
সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত, পরিচ্ছন্ন ও নিরপেক্ষ বিচারের জন্য কলকাতা পৌরসংস্থা সর্বশক্তি নিয়োগ করে থাকে। তবুও ব্যক্তিগত আইনজ্ঞ নিয়োগ করলে যদি আপনি অধিকতর স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, আপনি অবশ্যই তা করতে পারেন।
২১। সাধারণ মূল্যায়ন পদ্ধতিটি ঠিক কী? কতবার এবং কত বছর অন্তর এই মূল্যায়ন হয়?
কলকাতা পৌরসংস্থা আপনার ঠিকানায় গিয়ে সম্পত্তির পরিমাণ ও তার ব্যবহার পরিদর্শন করে একটি মূল্যমান নির্ধারণ করে। সাধারণত বসবাসের জন্য ব্যবহৃত সম্পত্তির ক্ষেত্রে বার্ষিক মূল্যমান বর্তমান মূল্যমানের ন্যূনতম ১০% বৃদ্ধি করা হয়, যদি সেই সম্পত্তির বা তার ব্যবহারের কোনও পরিবর্তন বা অতিরিক্ত সংযোজন করা না হয়। অনাবাসিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির হার ন্যূনতম ২০% হয়ে থাকে। সাধারণত প্রতি ৬ বছর অন্তর সাধারণ মূল্যায়ন করা হয়।
২২। আমি কি নিজেই আমার সম্পত্তির মূল্যায়ন করতে পারি? যদি তা সম্ভব হয় তবে তার পদ্ধতিটি কী? সম্পত্তির পুনর্মূল্যায়নও কি আমার দ্বারা সম্ভব? সে পদ্ধতিটিই বা কেমন?
কলকাতা পৌরসংস্থা স্বকৃত মূল্যায়ন পদ্ধতি ২০১১ সাল থেকে প্রবর্তন করার পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে, কলকাতা পৌরসংস্থার অন্তর্ভূক্ত কোনও সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয় করলে অথবা সম্পত্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন করলে তা কলকাতা পৌরসংস্থাকে অবশ্যই লিখিতভাবে জানান।
উপরে
২৩। সম্পত্তি ব্যবহারের কোনও পরিবর্তন (যেমন, বসবাসের পরিবর্তে বাণিজ্যিক ব্যবহার ইত্যাদি) অথবা ভোগকারীর ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন (যেমন, ভাড়াটিয়া সংযোজন বা বিয়োজন ইত্যাদি)-এর ফলে যদি আমার আয়ের কোনও তারতম্য ঘটে তাহলে আমার কী করা উচিত?
এই ধরনের পরিবর্তন ঘটলে যে পদক্ষেপগুলি আপনাকে নিতে হবে তা এইরকম:
ক) কলকাতা পৌরসংস্থার কেন্দ্রীয় ভবনে অবস্থিত নথিপত্র বিভাগ (সেন্ট্রাল রেকর্ডস) থেকে এ-৭৫ ফর্ম কিনে যথাযথভাবে তা পূরণ করে সংশ্লিষ্ট কর নির্ধারক (অ্যাসেসর কালেকটর)-এর কাছে জমা দিন।
খ) ফর্ম জমা দেওয়ার ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় আমাদের পরিদর্শক পৌঁছে যাবেন,
গ) পরিদর্শনের পর সংশ্লিষ্ট পরিদর্শক পরিদর্শন বইতে (ইনস্পেকশন বুক) সেটি নথিভুক্ত করবেন,
ঘ) উপ কর নির্ধারক, কর নির্ধারক ও উপ পৌর মহাধ্যক্ষ-রাজস্ব (ডেপুটি মিউনিসপ্যাল কমিশনার-রেভিনিউ) মুখ্য ব্যবস্থাপক-রাজস্ব (চিফ ম্যানেজার-রেভিনিউ) এর কাছ থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় শুনানি বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হবে।
ঙ) শুনানি আধিকারিক সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির মালিক ও কর নির্ধারণ বিভাগের কর্মীদের দ্বারা প্রদত্ত কাগজপত্র পরীক্ষা করে ওই এলাকায় অন্যান্য সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযুক্ত করের সঙ্গে তুলনামূলক পদ্ধতিতে বিচার করে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির যথাযথ মূল্যায়ন করবেন,
চ) যদি সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির মালিক ওই মূল্যায়নে সন্তুষ্ট না হন, তবে ১৭ নং প্রশ্নের উত্তরে দেওয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে পৌর কর নির্ধারণ ন্যায়পীঠে (মিউনিসিপ্যাল অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইবুন্যাল) পৌর আইন, ১৯৮০-র ১৮৮ ধারা অনুযায়ী আবেদন করতে পারেন।
২৪। নতুন/ অনুপূরক (ফ্রেশ/সাপ্লিমেন্টারি) বিল কী?
শুনানির ঠিক পরেই যে বিল প্রস্তুত হয় তাকেই বলে নতুন/অনুপূরক (ফ্রেশ/সাপ্লিমেন্টারি) বিল। যদি মূল্যমান প্রথমবার নির্ধারিত হয় তবে কেবলমাত্র নতুন (ফ্রেশ) বিল প্রস্তুত হয়। পুনর্মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পূর্বের থেকে মূল্যমান বর্ধিত হয়, তবেই অনুপূরক (সাপ্লিমেন্টারি) বিল প্রস্তুত করা হয়।
২৫। কলকাতা পৌরসংস্থা কী কী ব্যবহার-ব্যয় (ইউজার চার্জ) নিয়ে থাকে?
কলকাতা পৌরসংস্থা আরোপিত ব্যবহার-ব্যয় (ইউজার চার্জ) সম্বন্ধে জানতে হলে কর ও মাশুল হার সংক্রান্ত পৃষ্ঠা দেখুন।
২৬। বকেয়া কর মেটানোর জন্য কি কলকাতা পৌরসংস্থা কোনও অনুস্মারক পত্র (রিমাইন্ডার) দিয়ে থাকে? দিলে কতবার তা দেওয়া হয়?
প্রতি তিনমাস অন্তর এই অনুস্মারক পত্র (রিমাইন্ডার) দেওয়া হয়। এছাড়াও বার্ষিক বিলের সঙ্গে বকেয়ার বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়।
উপরে
২৭। কত রকমভাবে আমি কর জমা দিতে পারি?
২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত নগদ টাকায় এবং ২৫,০০০ টাকার বেশী হলে "KOLKATA MUNICIPAL CORPORATION" এর নামে ব্যাঙ্ক ড্রাফ্ট অথবা পে-অর্ডারের মাধ্যমে কর জমা দিতে হবে।
২৮। সম্পত্তি কর প্রদানের সময়সূচী কী? আমি কি মাসিক কিস্তিতে কর প্রদান করতে পারি?
ট্যাক্স বিলের মধ্যেই এই সময়সূচীর উল্লেখ আছে। সাধারণতঃ ত্রৈমাসিক কিস্তিতে কর প্রদান করতে হয়।
২৯। বকেয়া সম্পত্তি কর কোথায় জমা দিতে পারব?
কলকাতা পৌরসংস্থার বৈদ্যুতিন নাগরিক পরিষেবা কেন্দ্রে (ই-কলকাতা সিটিজেন সার্ভিস সেন্টার), যে কোনও কর গ্রহণ কামরায় (ক্যাশ কাউন্টার) কিংবা সম্পত্তি করের বিলের পিছনে মুদ্রিত ব্যাঙ্কগুলিতে আপনি সম্পত্তি কর জমা দিতে পারেন। তবে, নতুন/অনুপূরক (ফ্রেশ/সাপ্লিমেন্টারি) বিলের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র কলকাতা পৌরসংস্থার বৈদ্যুতিন নাগরিক পরিষেবা কেন্দ্রে (ই-কলকাতা সিটিজেন সার্ভিস সেন্টার) ও যে কোনও কর গ্রহণ কামরায় (ক্যাশ কাউন্টারে) আপনি সম্পত্তি কর জমা দিতে পারেন।
৩০। আমি কি আমার সম্পত্তি করের বিল আগাম মিটিয়ে দিতে পারি?
পারেন। তবে, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর নির্ধারকের (অ্যাসেসর কালেকটর) অনুমোদন প্রয়োজন।
৩১। যদি সম্পত্তি করের বিল মেটাতে আমার বিলম্ব হয় তাহলে কী ঘটবে?
সর্বদাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পত্তি করের বিল মিটিয়ে দেওয়াই কর্তব্য। অন্যথায় এর ফল যথেষ্ট অপ্রীতিকর হয়ে দাঁড়ায় এমনকি, জল সরবরাহের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে। পৌর আইন, ১৯৮০-র ২১৯-২১বি, ২২৩, ২২৫ এবং ২৭৫ (এএ) ধারা অনুযায়ী অনাদায়ী সম্পত্তি করের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান আছে:
ক) বিল উপস্থাপনের ২১ দিনের মধ্যে কর জমা না দিলে বিলে উল্লিখিত ছাড় (রিবেট) দেওয়া হয় না,
খ) নির্দিষ্ট ত্রৈমাসিক কালের শেষ তারিখের মধ্যে কর জমা না দিলে সম্পত্তি করের ওপর ১৫% অবধি দণ্ড বা জরিমানা (পেনাল্টি) ধার্য করা হয়।
গ) বকেয়া সম্পত্তি কর দেওয়ার ক্ষেত্রে বিল উপস্থাপনের তারিখ থেকে বিল জমা দেওয়ার মাস পর্যন্ত সুদের (সরল) হার অনধিক ১ লাখ টাকা বার্ষিক মূল্যমানের সম্পত্তির ক্ষেত্রে বার্ষিক মূল্যমানের ১.০% এবং ১ লাখ টাকা বা তার অধিক বার্ষিক মূল্যমানের সম্পত্তির ক্ষেত্রে বার্ষিক মূল্যমানের ১.৫%,
ঘ) ২২০-২২১ ধারা অনুযায়ী ক্রোক পরোয়ানা (ডিসট্রেস ওয়ারেন্ট) জারি করে অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করে দেওয়া হয়,
ঙ) ২২১-এ ধারা অনুযায়ী স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও বিক্রয় করা হতে পারে এবং ২২১-বি ধারা অনুযায়ী আটক করা কিংবা ক্রোক করা সম্পত্তি বিক্রয় করা হতে পারে।
চ) বঙ্গ আইন ৩, ১৯১৩ (Bengal Act III, 1913 )-র ২২৩ ধারা অনুযায়ী কর আদায় করা হয়,
ছ) বঙ্গ আইন ৩, ১৯১৩ (Bengal Act III, 1913 )-র ২২৫ ধারা অনুযায়ী ভাড়াটিয়াদের মাসিক ভাড়া থেকে বকেয়া কর শোধের ব্যবস্থা করা হয়,
জ) বঙ্গ আইন ৩, ১৯১৩ (Bengal Act III, 1913) -র ২৭৫ (এ এ) ধারা অনুযায়ী জল সরবরাহের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
উপরে
৩২। যথাসময়ে সম্পত্তি করের বিল না পেলে কী করব?
এই ধরনের ঘটনা সচরাচর ঘটে না বললেই চলে, তবুও অন্যায্য গাফিলতি বা কোনও অজ্ঞাত কারণে যদি আপনি যথাসময়ে সম্পত্তি করের বিল না পেয়ে থাকেন, তবে আপনি অনতিবিলম্বে কলকাতা পৌরসংস্থার বৈদ্যুতিন নাগরিক পরিষেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করে সম্পত্তি করের নকল (ডুপ্লিকেট) বিল সংগ্রহ করে জমা দিতে পারেন। সম্পত্তি কর জমা না দেওয়ার কারণ হিসেবে যথাসময়ে বিল না পাওয়ার বিষয়টি কখনোই যুক্তিসঙ্গত হয়ে উঠতে পারে না। পৌরসংস্থার যে কোনও কর গ্রহণ কামরায় (ক্যাশ কাউন্টার) আপনি কেবলমাত্র আপনার অ্যাসেসি নম্বর উল্লেখ করলেই বিল জমা দেওয়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
৩৩। আমার এলাকায় যদি অমূল্যায়িত (আনঅ্যাসেস্ড) সম্পত্তির সন্ধান পাই তবে কীভাবে বিষয়টি কলকাতা পৌরসংস্থার গোচরে আনতে হবে?
সম্পত্তি কর থেকে গৃহীত আয় কলকাতার নাগরিকদের পরিষেবা দেওয়ার কাজেই ব্যয়িত হয়। নিয়মিত কর জমা না দেওয়াটা একটি গুরুতর অপরাধ। যে সমস্ত মালিক তাদের সম্পত্তি কর নিয়মিত জমা দেন না তারা এই শহর অর্থাৎ কলকাতার শুভাকাঙ্ক্ষী নন। যদি কোনও ব্যক্তি এই শহরকে ভালোবেসে এই ধরনের পদক্ষেপ নেন, কলকাতা পৌরসংস্থা তাদের অবশ্যই সাধুবাদ জানায় এবং এক্ষেত্রে আপনার সম্বন্ধীয় যাবতীয় তথ্য গোপন রাখা হবে। নিম্নের সারণি-তে উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট কর নির্ধারক মহাশয়ের সঙ্গে প্রদত্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি সরাসরি পত্র বা বৈদ্যুতিন ডাক (ই-মেল) মারফৎ বিষয়টি পৌর মহাধ্যক্ষ (মিউনিসিপ্যাল কমিশনার) মহাশয়ের গোচরে আনতে পারেন। (ই-মেল-mc@kmcgov.in)।
অন্তর্বিভাগীয় তালিকা ও যোগাযোগের বিশদ বিবরণ
ক্রমাঙ্ক |
সংশ্লিষ্ট আধিকারিক |
ঠিকানা |
দূরভাষ |
১ |
মুখ্য ব্যবস্থাপক(রাজস্ব) (চিফ ম্যানেজার-রেভিনিউ) |
৫, এস এন ব্যানার্জি রোড কলকাতা-৭০০০১৩ |
২২৮৬-১২৬৩ |
২ |
কর নির্ধারক/অ্যাসেসর কালেকটর (দক্ষিণ) (ওয়ার্ড ৫২-৯০ ৬৬,৬৭,৮৯ বাদে) |
৫, এস এন ব্যানার্জি রোড কলকাতা-৭০০০১৩ |
|
৩ |
কর নির্ধারক/অ্যাসেসর কালেকটর (উত্তর) (ওয়ার্ড ১-৫১) |
৫, এস এন ব্যানার্জি রোড কলকাতা-৭০০০১৩ |
২২৮৬-১০০০ (এক্স-২৪০৫) |
৪ |
কর নির্ধারক/অ্যাসেসর-কালেকটর (টলি ট্যাক্স) (ওয়ার্ড ৬৬,৬৭,৮৯ ও ৯১-১০০) |
২১২, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ (গড়িয়াহাট বাজার ৪র্থ তল কলকাতা-৭০০ ০১৯) |
২৪৪০-২৪২৭ ২৪৪০-৬২০৬ ২৪৬০-০২৭২ |
৫ |
কর নির্ধারক/অ্যাসেসর কালেকটর (জি আর ইউ) (গার্ডেনরিচ, বরো ১৫) (ওয়ার্ড ১৩৩-১৪১) |
ই৩, গার্ডেনরিচ সার্কুলার রোড কলকাতা-৭০০০২৪ |
২৪৬৯ ৬০৪৯ |
৬ |
কর নির্ধারক/অ্যাসেসর কালেকটর (এস এস ইউ) (সাউথ সুবার্বন, বরো ১৩।১৪) (ওয়ার্ড ১১৫-১৩২) |
১, ডায়মণ্ড হারবার রোড, (তারাতলা ক্রসিং নিকটস্থ) কলকাতা-৭০০০৩৮ |
২৪৫৭ ৬১০৭ |
৭ |
কর নির্ধারক/অ্যাসেসর কালেকটর (জে ইউ) (যাদবপুর, বরো ১১) (ওয়ার্ড ১০,১,১০২,১১০-১১৪) |
বাঘাযতীন স্টেশন রোড, বাঘাযতীন বাজার (ইউনিট নং ১, ৩য় তল) কলকাতা-৭০০০৯২ |
২৪২৫ ৫৯৬০ |
৮ |
কর নির্ধারক/অ্যাসেসর কালেকটর (জে ইউ) (যাদবপুর, বরো ১২) (ওয়ার্ড ১০৩-১০৯) |
৭৫, সন্তোষপুর অ্যাভিনিউ (সন্তোষপুর বাজার ৪র্থ তল) কলকাতা-৭০০০৭৫ |
২৪৫৭ ০৭১৮ |
৩৪। দেরিতে কর প্রদানের জন্য জরিমানার পরিমাণ কত?
নিম্নলিখিত হারে জরিমানা আরোপ করা হয় :
বিলের পরিমাণ |
জরিমানার পরিমাণ |
৯৯ টাকা অবধি |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ০.৫% |
১০০ টাকা থেকে ১৯৯ টাকা অবধি |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ১.০% |
২০০ টাকা থেকে ২৯৯ টাকা অবধি |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ১.৫% |
৩০০ টাকা থেকে ৩৯৯ টাকা অবধি |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ২.০% |
৪০০ টাকা থেকে ৪৯৯ টাকা অবধি |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ২.৫% |
৫০০ টাকা থেকে ৬৯৯ টাকা অবধি |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ৩.৫% |
৭০০ টাকা থেকে ৯৯৯ টাকা অবধি |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ৫.০% |
১০০০ টাকা থেকে ৪৯৯৯ টাকা অবধি |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ১০.০% |
৫০০০ টাকা ও তার উপর |
ত্রৈমাসিক বিলের পরিমাণের উপর ১৫.০% |
|
|
উপরে |
|